চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী মোসলেমা হত্যার রহস্য উদঘাটন

মিঠাপুকুরে গর্ভের সন্তান নষ্ট না করায় প্রেমিকাকে হত্যা করেছে প্রেমিক

 

রুবেল ইসলাম,রংপুর

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী মোসলেমা খাতুন(১৫) নামের দশম শ্রেণির একজন ছাত্রীর হত্যার মূল তথ্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।একইসাথে ১২ ঘন্টার মধ্যেই হত্যাকারী গ্রেফতার  করেন।ঘটনার মূল সত্যতা বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন সেই আসামী

মিঠাপুকুরে গর্ভের সন্তান নষ্ট না করায় প্রেমিকাকে হত্যা করেছে প্রেমিক
মোসলেমা হত্যা মামলায় প্রেমিক চাচাতো ভাই নাহিদ


গত শনিবার (২৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার ভাংনি ইউনিয়নের বাউরাকোট গ্রামের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে মোসলেমা নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে মিঠাপুকুর থানা পুলিশলাশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।মৃত্যু মোসলেমা ওই গ্রামের মোতালেব মিয়ার মেয়ে সে খুব মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন এবং স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এই বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতোপরিবারে দুই ভাই বোনের মধ্যে সে ছোট ছিলো

বাবার ভাষ্যমতে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে মোসলেমা বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় পরে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পায় না কোন সন্ধান পায়নিএ ঘটনায় শনিবার বিকেলে তিনদিন পর মোসলেমার বাড়ির পাশের একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে হঠাৎ গন্ধ ভেসে আসে গন্ধের সূত্র ধরে ক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে স্থানীয়রা মোসলেমার অর্ধগলিত মরদেহ দেখতে পান পরে মিঠাপুকুর থানা পুলিশসহ পিবিআই এবং সিআইডি ঘটনাস্থলে আসেন এবং মরদেহ উদ্ধার করেন

মিঠাপুকুরে গর্ভের সন্তান নষ্ট না করায় প্রেমিকাকে হত্যা করেছে প্রেমিক
ডিবি পুলিশের কাছে হাতকড়া পড়া অবস্থায় নাহিদ


 বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘটনাটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় এ ঘটনায় পরিবারসহ এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া সবাই এই ঘটনায় জড়িত হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করে

 মোসলেমার  বাবা বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে মামলা নং-৩৮, তাং-২৫.০৪.২০২১ ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ দন্ড বিধি

 মিঠাপুকুর থানা পুলিশ কোন প্রকার সময়ক্ষেপন না করে তদন্তে নেমে পড়েন লাশ উদ্ধারের ১২ ঘন্টার মধ্যেই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাত ০২.৪৫ মিনিটে হত্যাকারী নাহিদ হাসান (২২) নামে একজনকে গ্রেফতার করেন ।সে মিঠাপুকুর থানার একই ইউনিয়নের  দলসিংহপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে বলে জানায় পুলিশ।

রংপুরের ডি-সার্কেল এএসপি কামরুজ্জামান বলেন-  প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ তাদের জানায়-  মোসলেমা তার চাচাতো বোন হয় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক প্রায়ে এক বছরের তার সাথে একাধিকবার দৈহিক মিলন হয় সর্বশেষ তারা ডিসেম্বর মাসে শারীরিক সর্ম্পক করেন এরপর নাহিদ দিনাজপুরে চাকুরীতে চলে যায় ঘটনার ১৫ দিন আগে জানায় মোসলেমা ফোনে নাহিদকে জানায়- সে প্রেগন্যান্ট! কিন্তু এ কথা শোনার পর নাহিদ তা অস্বীকার করে এতে তাদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়

ঘটনার দিন সন্ধ্যা আনুমানিক রাত সাড়ে নয়টায় মোসলেমা নাহিদকে ফোন দিয়ে তার কাছে আসতে বলে কিন্তু নাহিদ আসতে চায় না মোসলেমা বার বার তার সাথে দেখা করতে চাইলে অবশেষে  সে দেখা করত বাধ্য হয় তারা ভুট্টা ক্ষেতে গিয়ে দেখা করে এবং মোসলেমা তার পেটের বাচ্চা রাখতে চায় এবং এর জন্য ব্যবস্থা করতে বলে কিন্তু নাহিদ তা মানতে নারাজ সে যেকোন ভাবে বাচ্চা নষ্ট করতে বলে এর এক পর্যায়ে নাহিদ রেগে গিয়ে তাকে ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে মেরে ফেলে এরপর সে বাসায় চলে আসে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকে

গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞ আদালতে তার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন