মিঠাপুকুরে পাটখড়ি দিয়ে তৈরী শহীদ মিনারে শিশুদের পুষ্পার্ঘ অর্পন

মিঠাপুকুর,রংপুর

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাটখড়ি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া  শিশুরা।শিশুদের এই উদ্যোগে অবাক হয়েছেন অভিভাবকরা।

উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নে ভাষা শহীদের স্মরণে শহীদ মিনার না থাকায় কিশামতজালাল গ্রামে প্রাথমিকে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন।২০শে ফেব্রুয়ারী সারাদিন কয়েকজন শিশু মিলে পাট খড়ি সংগ্রহ করে শহীদ মিনার তৈরী করেন।২১শে ফেব্রুয়ারী প্রভাতে জঙ্গল থেকে বিভিন্ন ধরণের ফুল(ভাটিয়ার ফুল,জবা,গাঁদা,লাইয়ের ফুল) সংগ্রহ করে সকলে মিলে ফুল দেয়।  


জানা যায়-কিশামতজালাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে যাতায়াত করা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান,মিঠাপুকুর গ্লোডেন সান বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র শাকিবুল হাসান ও স্থানীয় ব্রাক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া নারগীস আক্তারসহ শিশুরা মিলে এই শহীদ মিনার তৈরী করেন।এতে সার্বিক সহযোগিতা করেন সদ্য কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা সম্পর্ণ করা ওবায়দুল ইসলাম।

শাকিবুল হাসান জানায়-সবাই শহীদ মিনারে ফুল দিবে আমরা কেন বঞ্চিত হবো।তাই সকালে ফুল সংগ্রহ করে সকলে মিলে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।

ওবায়দুল ইসলাম বলেন-তাদের ইউনিয়নে কিংবা বাড়ির পাশে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণে কোন শহীদ মিনার না থাকায় বেকায়দায় পড়তে হয় এই ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের।টিভিতে ও ছবিতে কিংবা বইয়ের পৃষ্ঠায় ছাড়া শহীদ মিনার দেখতে পায়না।প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলে ভাষা শহীদদের ত্যাগ ও তিতিক্ষা সম্পর্কে জানতে পারতো।পড়ালেখা্ শেষে বাড়িতে অবস্থানকালে দেখি কিছু শিশু পাট খড়ি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করার চেষ্টা করছে বিষয়টি ভালো লাগায় তিনি সহযোগিতা করেন।



যাদবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও অভিভাবক আক্কাস আলী জানান- তার ছেলে শাকিবুল সারাদিন বাড়িতে ভাত না খেয়ে সারাদিন ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করছে।সকালে তাদের খালি পায়ে ফুল দেওয়া থেকে বিস্মিত হই।ভাষার জন্য শহীদদের মর্যাদা শিশুদের মনে কতটুকু।অথচ আমরা উচ্চ শিক্ষিতরাই শহীদ মিনারকে অসম্মান করি।

ব্রাকের শিক্ষিকা মৌসুমী আক্তার জানায়-ভাষা শহীদের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের অবগত এবং চারুকারুর জন্য ব্লাক বোর্ডে তাদের শহীদ মিনার আর্ট করা শিক্ষিয়েছেন।কিভাবে ও কেন শহীদদের সম্মান করতে হবে তা শিক্ষার্থীদের অবগত করেন।সকালে শিশুদের তৈরী শহীদ মিনার দেখে তিনি নিজেও আশ্চর্যম হন।