মিঠাপুকুরে ভূয়া তালিকা প্রস্তুত,কালবৈশাখী ঝড়ের বরাদ্দ আত্মসাৎ করলেন প্যানেল চেয়ারম্যান
মিঠাপুকুরে ভূয়া তালিকা প্রস্তুত,কালবৈশাখী ঝড়ের বরাদ্দ আত্মসাৎ করলেন প্যানেল চেয়ারম্যান
মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নে কাল বৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ী পড়ে যাওয়া পরিবারের ভূয়া তালিকা প্রস্তুত করে বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ,মৃত ব্যক্তির নাম ও টিপসই ব্যবহার করাসহ একই নাম একাধিকবার ব্যবহার করে চাল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান গোলজার হোসেনের বিরুদ্ধে। ঝড়ে পড়া ঘরবাড়ি দেখিয়ে ভূয়া তালিকা তৈরী করে চাল আত্মসাৎ করায় সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাহের আলী।জানা যায়-বর্তমান চেয়ারম্যান হজ্জ পালনের কারণে সৌদি আরবে অবস্থান করায় পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্যানেল চেয়ারম্যান হিসাবে গোলজার হোসেন।
গত ৬ই জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগের কপি হাতে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে জানা যায়-কাল বৈশাখী ঝড়ে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ২৯১টি পরিবারের ঘর ভেঙ্গে গেছে তা সম্পর্কে অবগত নয় এলাকাবাসী। তবে চাল বিতরণ ও মৃত ব্যক্তির টিপ সই দিয়ে চাল গ্রহণ নিয়ে প্রশ্নের ধ্রæ¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। সুষ্ঠ তদন্ত করে কঠিন বিচারের দাবী এলাকাবাসীর।তালিকা থেকে জানা যায়-১ নং ওয়ার্ডে ১১টি,২ নং ওয়ার্ডে ৩০টি,৩ নং ওয়ার্ডে ১৭,৪ নং ওয়ার্ডে ১৩৮টি,৫ নং ওয়ার্ডে ২১টি,৬ নং ওয়ার্ডে ১৩টি,৭ নং ওয়ার্ডে ১৪টি ,৮ নং ওয়ার্ডে ৩৮টি ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
অভিযোগকারী ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাহের আলী জানায়-তার বাড়ি কালবৈশাখী ঝড়ে তার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।তার স্ত্রী লতুফা বেগমের নামে ১০১ নম্বর তালিকা প্রস্তুত করেছে। সেখানে স্বামী হিসাবে আবার তার স্ত্রীর নাম দেওয়া আছে।কিন্তু চাল বিতরনের দিনে তার স্ত্রীকে চাল দেওয়া হয়নি।
শুধুমাত্র তাহের আলীর স্ত্রীর নামেই ভূল নয়। তালিকায় একই নাম বারবার এবং বর্তমান চেয়ারম্যানের বাবা,চাচা,ভাইসহ আত্মীয়দের নাম দিয়ে চাল উত্তোলন করা হয়েছে। তালিকার ৯৪ নম্বরে মৃত বাদশাহ মিয়া নামে একজনের টিপসই দিয়ে চাল উত্তোলন করছে পাওয়া যার্য়।সেখানে তার বাবার নামও দেওয়া হয়েছে মৃত বাদশা মিয়া।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়-যদি একটি ওয়ার্ডে ১৩৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে শুধু ইউনিয়ন নয় সারাদেশ জানার কথা। তাদের ইউনিয়ননে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি শুধুমাত্র কয়েকটি গাছের ডালপালা ভাঙ্গা ছাড়া। দূর্নীর্তি করছে কিন্তু এহেন দূর্নীতি কখনই দেখেননি তারা বলে দাবী।
ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাইদুল ইসলাম জানায়- বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত রতনকে নিয়েও প্রশ্ন এবং প্যানেল চেয়ারম্যানের পরিবারের মাধ্যমে এবং বর্তমান চেয়ারম্যানের বাবা,চাচা,ভাই ও ভাতিজাদেও নাম দিয়ে পরিবারকেন্দ্রীক চাল আত্মসাৎ হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের যোগসাজোসে ভূয়া তালিকা করে বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হওয়া চেয়ারম্যান হজের ব্যবসা ও আদম ব্যবসা করার কারণে ইউনিয়নের মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন।
ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণ ও তালিকা তৈরী করণ বিষয়ে অবগত করা হয়নি ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকেও বলে দাবী শফিকুল ইসলামের। তিনি জানান- ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে চাল বিতরণ করছেন প্যানেল চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন বিতরণ করছেন। চাল বিতরণে না কোন সরকারী কর্মকর্তা কিংবা ট্যাগ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না বলে তিনি জানা।
এবিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান গোলজার হোসেনের সাথে পরিষদে কিংবা মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান- বিষয়টি তিনি অবগত আছেন এবং এ বিষয়ে সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
গত ৯ তারিখে চাল বিতরণে এই অনিয়ম নিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় সচিবের কক্ষে দুই ইউপি সদস্যের শুরু হয় তর্কতর্কি এবং একপর্যায়ে হাতাহাতি। সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সঠিক সুবিধাভোগীর কাছে পৌছে দিবে কাল বৈশাখী ঝড়ে বরাদ্দকৃত চাল এমন প্রত্যাশা বালারহাট ইউনিয়ন বাসীর।