মিঠাপুকুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ইউপি সদস্যাদের
স্টাফ রিপোর্টার:
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ৭নং লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৩ জন সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য। তারা হলেন, লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য কহিনুর বেগম (১,২, ৩নং ওয়ার্ড), রশিদা বেগম (৪,৫,৬নং ওয়ার্ড) ও মিনারা বেগম (৭,৮,৯নং ওয়ার্ড)। শনিবার (৬ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউপি সদস্য মিনারা বেগম।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা প্রত্যক্ষ ভোটে লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। প্রথম থেকেই বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডল আমাদের কাছে ফাঁকা রেজুলেশনে স্বাক্ষর গ্রহন করে ইচ্ছেমত কাজ করেন। ইউনিয়ন পরিষদকে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানিয়ে তিনি নামমাত্র প্রকল্প বানিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও, আমাদেরকে বাদ দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন দালালকে সাথে নিয়ে মাতৃত্বকালীন ভাতায় তালিকা প্রনয়নের কাজ করছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ইউপি সদস্যা মিনারা বেগম
লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন, লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ২০৭ টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ হয়। চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডল তাদেরকে সাতটি ভিজিডি ভাতা কার্ড দেওয়ার কথা বলে ফাঁকা রেজুলেশনে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। পরে কয়েকজন ইউপি সদস্য ও স্থানীয় দাললদের সাথে নিয়ে চেয়ারম্যান ওই তালিকা প্রনোয়ন করেন। এর বিনিময়ে ভিজিডি কার্ডধারীদের কাছে মোটা অংকের টাকা উৎকোচ গ্রহণ করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, প্রতি বছর মিঠাপুকুর সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় হতে ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি কর ১% বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা বিভিন্ন ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। প্রতি বছর উপজেলা হাট-বাজার নিলাম ডাকের ১৫% টাকা উত্তোলন করে পরিষদের ফান্ডে জমা করেন। পরে ওই টাকাগুলো হাট-বাজার উন্নয়নে না লাগিয়ে সমস্ত টাকা পকেটস্থ করেছেন। এছাড়াও, প্রতি বছর এডিবি’র টাকা দিয়ে নানা ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ওই টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন।
তারা আরও বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে এলজিএসপি/৩ অর্থ বছরের প্রথম কিস্তি ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেন ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডল। পরে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ওই টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন তিনি। ওই ৩ জন সংরক্ষিত ইউপি সদস্য বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের কোন সদস্য ও স্থানীয় কেউ তার (চেয়ারম্যান) বিপক্ষে কথা বললে, গুন্ডা বাহিনী অথবা মামলা দিয়ে তাদের লাঞ্চিত করেন। লতিবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চলে চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডলের নেতৃত্বে।
এছাড়াও, নানা অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ এনে ওই ৩ সংরক্ষিত নারী সদস্য রংপুর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও এ পর্যন্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করেনি প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে লতিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মন্ডল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ তো তাদেরকে ছেড়ে দিতে পারিনা। আমার বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
Post a Comment