মিঠাপুকুরে সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে গাছ কর্তন


 

 
মিঠাপুকুরে সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধভাবে গাছ কর্তন
 
 
মিঠাপুকুর প্রতিনিধি
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গাছ কর্তনের বিষয়ে কোন ধরনের রেজুলেশন কিংবা অবহতিকরণ সভা না করেই লুকোচুরি করে গাছ বিক্রি করেছে চেয়ারম্যান এমন অভিযোগ ইউপি সদস্যদের।
গত শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় কর্তনকৃত গাছ সহকারে বহনকারী টলি আটক করেছে ইউপি সদস্যরা। কর্তনকৃত ইউক্লিপটাস গাছ ও বহনকারী টলি ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে।
সরেজমিনে তদন্ত করে জানা যায়- উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের খোর্দ্দ মহদীপুর গ্রামের ভবেশ সরকারের বাড়ি থেকে বুজরক মহদীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তার দুপ্বার্শের গাছ কোন প্রকার দরপত্র বিজ্ঞপ্তি এবং ইউনিয়ন পরিষদে অবহতিকরন সভা না করে কর্তন করা হয়। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মাস্টার ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে গাছ কর্তনের বিষয়টি তারা অস্বীকার করেন। একই সাথে দীর্ঘদিন ধরে দুজনেই অসুস্থ রয়েছেন বলে জানান।
আটককৃত টলী চালক ও লেবার শ্রমিকদের গাছ কে ক্রয় করেছে তা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান- চেংমারী ইউনিয়নের মাজেদুল ইসলাম নামে একজন কাঠ ব্যবসায়ী এই কাজগুলো ক্রয় করছেন। মাজেদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সাময়িক সময় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হন। পরবর্তীতে তার সাথে কথা হলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে গাছ ক্রয় করেছেন বলে অবগত করেন। একই সাথে চার লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে এই কাজগুলো ক্রয় করেছেন বলে দাবী করেন। ক্রয় কৃত গাছ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো কাগজপত্র তাদের কাছে আছে কিনা তা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা তা দেখাতে পারেননি।বরং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মাস্টারের হাতে এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছেন বলে জানান। আর এই গাছ কর্তনের বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের ভাই আনোয়ার হোসেন। গাছ ব্যবসায়ী মাজেদুল ইসলাম আরোও জানান- গাছ কর্তনের বিষয়ে মিঠাপুকুরের ইউনিক যুব উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আজারুল ইসলাম চৌধুরী নওশাদ ২০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন মাস্টারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- গত কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ রয়েছেন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ঢাকায় যাচ্ছেন আর গাছ কর্তনের বিষয়ে তিনি অবগত নন। গাছ কর্তনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জানতে পারে বলে অবগত করেন।
আটককৃত টলি বোঝাই ইউক্লিকটাস গাছ

 
চেয়ারম্যানের সূত্র ধরে ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে জানা যায়- বিগত ১৫ দিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অসুস্থ রয়েছেন। কে বা কাহারা গাছ কেটেছে? তার বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণভাবেই অজানা।
এ বিষয়ে ইউনিক যুব উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও সভাপতি আজহারুল ইসলাম চৌধুরী নওশাদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে গাছ কর্তনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ঢাকায় রয়েছেন তিনি আসলে তার জবাব নেবেন। কাঠ ব্যবসায়ী মাজেদুল ইসলাম তাকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছে এ কথা তিনি অস্বীকার করেন বরং তার সাথে কোন আর্থিক লেনদেন হয়নি বলে দাবি করেন।
নিয়ম নীতি না মেনে গাছ কর্তনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসানের সাথে হোয়াইট আপসে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- অবৈধভাবে কাজ কর্তনের বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন।বর্তমানে গাছগুলো ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় রাখা হয়েছে। চেয়ারম্যান অসুস্থতার জন্য ঢাকায় আছে তিনি আসলে তাকে সহ গাছ কাটার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

[blogger]

Amader Rangpur news

Contact Form

Name

Email *

Message *

Argon Maltimedia Bangladesh. Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget