রংপুরে করোনায় কপাল পুড়েছে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের
করোনায় কপাল পুড়েছে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের
কবির,রংপুর মরণঘাতি করোনা ভাইরাসের থাবায় মুখ থুবড়ে পড়েছে রংপুর অঞ্চলের কয়েকশ নারী উদ্যোক্তার স্বপ্ন। ব্যবসায় চলছে মন্দা। নেই ব্যাংক ঋণ সুবিধা ও আর্থিক প্রণোদনা। অনেকেই বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কারখানা। দু’একজন টিকে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত এ লড়াইয়ে কতটা সফল হবেন তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। ব্যাংক ঋণে জটিলতা, আর্থিক প্রণোদনা না পাওয়া, তৈরিকৃত পণ্য বিক্রি না হওয়াসহ নানা কারণে ভালো নেই এসব ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা।
রংপুর নগরীর দর্শনা কলেজপাড়া এলাকার ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা লাইজুতুন জান্নাত। তিনি পাট থেকে পণ্য তৈরি করে বিক্রি করতেন। একটা সময় ২০০ জন শ্রমিক তার অধীনে কাজ করলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে তা কমতে কমতে বর্তমানে ৩০/৪০ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। তৈরিকৃত মালামাল বিক্রি না হওয়ায় ঠিকমতো মজুরি দিতে পারছিলেন না তিনি শ্রমিকদের। ফলে ধীরে ধীরে কমতে থাকে উৎপাদন, কমতে থাকে শ্রমিক ও আয়। এক পর্যায়ে পুঁজি হারিয়ে এখন কোনোমতে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন লাইজুতুন জান্নাত। সরকারিভাবে আর্থিক প্রণোদনার কথা বলা হলেও তা জোটেনি তার কপালে। লাইজুতুন জান্নাত বলেন, টাকার অভাবে সিজনের সময়ও কম দামে পাট কিনতে পারছি না। বড় মহাজনরা পাট কিনে স্টক করছেন। একটা সময় পাটের দাম বৃদ্ধি পেলে তখন আরও কেনা সম্ভব হবে না। সরকারিভাবে যে প্রণোদনার কথা বলে হয়েছিল তাও পাইনি। বাধ্য হয়ে এ পেশা গুটিয়ে নিতে হচ্ছে। লাইজুতুন জান্নাতের মতো আরেক উদ্যোক্তা নাছিমা আক্তার। নিজ গ্রাম রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রানীবন্দরে পাটপণ্যের হস্তশিল্প কারখানা গড়ে তোলার পাশাপাশি রংপুর নগরীতে বাসা ভাড়া নিয়ে বীকন মোড়ে দিয়েছিলেন শো-রুম। করোনা ভাইরাস শুরুর আগে প্রায় দেড় লাখ টাকার কাঁচামাল কিনেছিলেন। পণ্য তৈরি না করতেই শুরু হয় লকডাউন। ফলে কাঁচামাল কেনাতেই আটকে থাকে সবটুকু পুঁজি। কয়েক মাস পর জমানো সবটুকু শেষ হলে বন্ধ করে দেন শো-রুম। বাসা ভাড়া দিতে না পারায় ফিরে যান গ্রামে। বন্ধ করতে বাধ্য হন কারখানাও। বর্তমানে গ্রামের আশপাশের নারীদের বাড়িতে কাজের অর্ডার দিয়ে কোনোরকমে ধরে আছেন এ পেশা।