মিঠাপুকুরে চরিত্রহীনতার অপবাদ,মহিলার বাড়ি ভাংচুর
মিঠাপুকুরে চরিত্রহীনতার অপবাদ
দিয়ে বিপত্নীক মহিলার বাড়ি ভাংচুর
মিঠাপুকুর(রংপুর)প্রতিনিধি
রংপুরের
মিঠাপুকুর উপজেলায় চরিত্রহীনতার অপবাদ দিয়ে বিপত্নীক মহিলার সরকারী রাস্তার তিন মোড়স্থ
বাড়ি ভাংচুর করা হয়।এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছবিরন বেগম খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন।
বৃহস্পতিবার(১০ই
মার্চ)সকাল সাড়ে নয়টায় উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভেতর লোহানী নামক
এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।স্থানীয় মসজিদের ইমাম,মুয়াজ্জিন ও প্রভাবশালী কর্তৃক বাড়ি ভেঙ্গে
দিয়েছে বলে ভুক্তভোগীর দাবী।
সরেজমিনে
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়-ছবিরন বেগম নামে মহিলার জন্মস্থান এখানে,বর্তমানে
তার কেউ নেই!নেই নিজস্ব কোন?বাপ দাদার পাওয়া সম্পতি, কালের বিবর্তনে হারিয়েছেন তিন
স্বামী,মায়ের নামে এক টুকরো জমি তাও মায়ে দিয়েছেন ছোট বোনের নামে ফলে স্থান হয়নি সেখানে।
আশেপাশের লোকের বাড়িতে কিংবা ক্ষেত খামারে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তার সংসার চলে,থাকেন
রাস্তার মোড়স্থ একটু ফাঁকা জায়গায় টিনের চালা তুলে।তবে কোন দিন কেউ তার খারাপ কিছু
দেখেনি কিংবা কোন লোক তাকে হাতে নাতে ধরেনি শুধু মানুষের মুখে কানাকানি।আর
এই কানাকানি থেকেই চারিত্রিক অপবাদ দিয়ে বাড়িটি ভেঙ্গে দেয় প্রভাবশালী ববি ও স্থানীয়
মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন।
ভুক্তভোগীর
স্বীকার ছবিরন বেগম বলেন-অনেক কষ্ট করে মানুষের বাড়িতে কাজকর্ম করে একটি গরু পালন করে
তা বিক্রি করেছেন কয়েক শতক জমি কেনার আশায়।রাস্তার মোড়স্থ জায়গায় বাড়ি করে থাকায় দীর্ঘদিন
ধরে তার বিরুদ্ধে নানা অপবাদ দেয় স্থানীয়রা।এখানে টিনের চালা তুলে বসবাস করা কিছু লোক
চায়নি এবং তারা তার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবী করেন।সেই টাকা না দেওয়ায় চরিত্রহীন
কেলেঙ্কারী জড়িয়ে বাড়ি ভেঙ্গে দেয়।সকালে ঘুম থেকে উঠে মেম্বারের বাড়িতে রেশনের কার্ডের
জন্য আইডি কার্ড দিতে যান সেখান থেকে ফিরে এসে তার বাড়ি ভাংচুর করা দেখে বাধা দিলে
প্রাণে মারার হুমকি দেয় ববি,ভয়ে তিনি চলে যান থানায় সেখানে লোক না থাকায় অভিযোগ না
দিয়েই ফিরে আসেন।পরে গিয়ে তার গরু বিক্রির ৩০ হাজার টাকা খোঁজ করলে তা পাননি।
প্রভাবশালী
ববি জানান-মহিলা বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত,দীর্ঘদিন ধরে তাকে নিষেধ করেছেন
কিন্তু শোনেন নি।তার বাড়ি ভাংচুর করে দেওয়ার সময় তার ঘর থেকে চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়।ইতিপূর্বে
তার নামে মিঠাপুকুর থানায় অনৈতিক কার্যক্রম করার কারণে সাধারণ অভিযোগ করা হয়েছিল বলে
তিনি জানান।এছাড়া আলু তোলার সময় ফসল নিয়ে যাওয়ার জন্য যাতায়াতের অসুবিধার কথা তিনি
দাবী করেন।
স্থানীয়
নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য সুলতান আহম্মেদ জানান-আমার কাছে কোন অভিযোগ আসেনি এবং একাধিকবার
আমি ছবিরন এর সামনে দিয়ে গিয়েছি কিন্তু সে আমাকে কিছু বলেনি।তাছাড়া এই মুহুর্তে তিনি
কিছু করতে পারবেন না কারণ এখন তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেনি।
মিঠাপুকুর
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন-বাড়ি ভাঙ্গার বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ
থানায় করেনি ।যদি অভিযোগ আসে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।