মিঠাপুকুরে
অজ্ঞান পার্টির নারী সদস্যসহ তিনজন গ্রেফতার
রুবেল ইসলাম,রংপুর।।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে অজ্ঞান পার্টির সক্রিয় দুইজন নারী সদস্যসহ মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।এ
সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি অটো,একটি মোটরসাইকেল,সাতটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫০,000/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়।
|
পুলিশের হাতে নগদ টাকাসহ অজ্ঞান দলের তিন সদস্য |
গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নে জুস খাওয়ায়ে অটো ছিনতায়ের চেষ্টাকালে দুই জন মহিলাকে আটক করে স্থানীয় জনতা ।পরে মিঠাপুকুর থানায় খবর
দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঐ দুইজন নারীকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসেন।আটকৃত দুইজন নারী সদস্য হলেন-পটুয়াখালী
জেলার মির্জাগঞ্জ থানার কিসমত শ্রীনগর গ্রামের রশিদ বেপারীর কন্যা সাথী আক্তার সুমাইয়া (১৮) ও বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ
থানার শাকবুনিয়া গ্রামের স্বপন জমারদারের কন্যা সাথী আক্তার সুমি (২০)।
|
মোটরসাইকেল,অটোসহ অজ্ঞান দলের মূলহোতা নুরআলমসহ দুই নারী সদস্যা |
এ বিষয়ে
(মিঠাপুকুর-পীরগঞ্জ)ডি-সার্কেল এএসপি কামরুজাজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানায়-
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের গ্রুপের মূলহোতা হচ্ছেন নুর আলম।পরে সু-কৌশলে নুরআলমকে রংপুর সদর উপজেলার সুলতানপুর থেকে আটক করে
থানা পুলিশ। তার বাসা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়নের কিশামতজালাল
গ্রামের আব্দুল ওহাব মিয়ার ছেলে নুর আলম(৩৮)।সে বিভিন্ন সময়ে ছন্দবেশে তার নাম পরিবর্তন করে তারেক, সাগর , রানা নামে ব্যবহার করতো। দুইজন মহিলা প্রাথমিকভাবে কিভাবে তারা ছিনাতাই করেন তা স্বীকার
করেন।
সার্কেল এএসপি বলেন-তারা প্রথমে যাত্রী বেশে অটো,অটো রিকশা বা মোটর সাইকেল ভাড়া করে। তারপর ড্রাইভারের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করে তাকে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। এরপর ড্রাইভার অচেতন হয়ে গেলে সুবিধামত জায়গায় থাকে ফেলে দিয়ে ড্রাইভার এর অটো, মোটর সাইকেল ও অটো রিকশা, মোবাইল, টাকাসহ মুল্যবান সামগ্রী নিয়ে চলে যায়।
|
অটো,অটো রিক্সা ও মোটরসাইকেল উদ্ধার |
এরপর উক্ত জিনিসপত্র তারা হাসানুজ্জামান@ হানিফ@কালু (২৮) এর কাছে হস্তান্তর করে। এরপর হানিফ অটোর রং পরিবর্তন করে বিক্রি করতো এবং তার গ্রুপের সদস্যদের তাদের পাওনা দিয়ে দিত। তারা প্রায় ৪ মাস ধরে এ পর্যন্ত ১৫/১৬ টি মতো অপারেশন করেছে তারা বলে জানায় এএসপি।
পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যমতে- তাদের হেফাজত হতে একটি অটো,একটি অটো রিকশা,একটি মোটর সাইকেল,চোরাই সাতটি মোবাইল,নগদ ৫০ হাজার টাকা, চোরাই কাজে ব্যবহৃত চারটি রেঞ্জ,একটি পাইপ রেঞ্জ, দু্ইটি স্টার রেঞ্জ উদ্ধার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে মিঠাপুকুর থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা
নং-৪৮ তাং-২৮.০৪.২০২১, ধারা-৩২৮/৩৭৯/৪১১ দন্ড বিধি।
এই প্রসঙ্গে সার্কেল এএসপি আরও জানান- গত ১২.০৩.২০২১ তারিখে পীরগঞ্জ থানার পদ্মহার গ্রামের
মৃত মফেজ উদ্দীনের ছেলে ড্রাইভার আঃ রাজ্জাক (৪০) মিঠাপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন- যে গত ইং ০৮.০৩.২০২১ তারিখ বেলা ১১.০০ টার দিকে তার অটো নিয়ে চতরা বাজারে আসেন এবং যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।পরে দুইজন মহিলা ও দুইজন পুরুষ যাত্রী এসে দিনাজপুর যাবে বলে তার অটো বেশি টাকায় ভাড়া নেয়। এরপর তারা নবাবগঞ্জ গিয়ে একটা হোটেল এ গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে। সেখানে দিনাজপুর যে কারণে
যাওয়ার কথা তিনি না আসার কারণে আবার তারা মিঠাপুকুরে আসবে বলে আঃরাজ্জাককে জানায়।ভেন্ডাবাড়ি
হয়ে আসার পথে ভেন্ডাবাড়ীতে এসে তারা সবাই মিলে জুস খায় এসময় কৌশলে ড্রাইভারকে জুসের মধ্যে পর্যাপ্ত ঘুমের ওষুধ খাওয়ায়। পরে ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করে ড্রাইভার অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে মিঠাপুকুর থানাধীন রানীপুকুর এলাকায় ফেলে দিয়ে তার অটো নিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ড্রাইভারকে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করান।এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেন।এই ঘটানার সাথে
তাদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।