৩০শে ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগ সরকার কেন এতো শক্তিশালী?

 

  • মুন্নী আক্তার
  • বিবিসি বাংলা, ঢাকা   
  • বাংলাদেশে ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর বিতর্কিত একটি নির্বাচনের মাধ্যমে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছিল আওয়ামী লীগ।২০০৮ সালের পর ওই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ও অভিযোগ রয়েছে।বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বড় অভিযোগ হচ্ছে: দলীয় সরকারের অধীনে নিয়ন্ত্রিত ও একচেটিয়াভাবে ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।তবে এসব অভিযোগ মানতে রাজি নয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। 
    ৩০শে ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগ সরকার কেন এতো শক্তিশালী?
    ৩০শে ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পরেও আওয়ামী লীগ সরকার কেন এতো শক্তিশালী?


    দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের বিষয়টিই আসলে কাল্পনিক।তিনি বলেন, "বিএনপি কাল্পনিক অভিযোগ করে লজ্জাজনক পরাজয়ের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করেছে।"

    রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন একতরফা ছিল। ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অনেক প্রশ্ন বা অভিযোগের মুখে টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠে বলে তারা মনে করেন।

    রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী বলেন, সংবিধানের সংশোধনী আনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে। এতে আরো কিছু অধ্যাদেশ সংযুক্ত করার মাধ্যমে, শাসন ক্ষমতায় যারা থাকবে তাদের হাতে বিশাল ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

    বিশ্লেষকরা বলছেন, শক্তিশালী কোন বিরোধী রাজনৈতিক দল গড়ে না ওঠাটাও একটা বড় কারণ যা সরকারকে টিকে থাকতে সহায়তা করেছে।

    তারা বলছেন, নির্বাচন নিয়ে কিছুটা বিতর্ক হলেও আওয়ামী লীগকে বড় ধরনের কোন বাধা মোকাবেলা করতে হয়নি।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক জিনাত হুদা মনে করেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় যে বিরোধী দল বিএনপি-সেটি আসলে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে শক্তভাবে দাঁড়াতেই পারেনি।

    "সরকার পরিবর্তনের জন্য যে ঢেউ তুলতে হয় বিএনপি সেটি তুলতেই পারেনি," বলেন তিনি।

     

    দিলারা চৌধুরী বলেন, নিবাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান বড়ই ধোঁয়াশে।"একদিকে তারা বলছে নির্বাচন মানি না, অন্যদিকে তারা আবার তাদের সাংসদে পাঠিয়ে দিয়েছে।"এবিষয়টি সরকারকে এক ধরনের বৈধতা দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

    তিনি বলেন, এছাড়্রও দলীয় রাজনীতিকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। "যেখানে পার্টি ছাড়া স্থানীয় সরকার ইলেকশন হতো সেখানেও পার্টির সিম্বল দিয়ে ইলেকশন হচ্ছে।"

    দিলারা চৌধুরী মনে করেন, প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে, যার ফলে কর্তৃত্ববাদী একটি সরকারের শাসন করতে সুবিধা হয়েছে।

    "বাংলাদেশে তো সেরকম কোন সিভিল সোসাইটি নাই। যারা ছিল তাদেরকে কো-অপট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে যাদের ভয়েস তোলার কথা ছিল যে এ ধরনের নির্বাচন দ্বারা গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না, তারা কোন ভয়েস ওঠায় নাই।"

    জিনাত হুদা মনে করেন, আওয়ামী লীগ কিছু ধারণা নিয়ে জনগনের সামনে এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে উন্নয়নের ধারণা যা মানুষ পছন্দ করেছে।ফলে কৌশলগতভাবেই বিএনপি পিছিয়ে গেছে বলে তিনি মনে মনে করেন।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সামনে রাজনৈতিক দিক থেকে এখনও বড় কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসারও কোন উদ্যোগ তারা দেখছেন না।

Location: Bangladesh

Post a Comment

[blogger]

Amader Rangpur news

Contact Form

Name

Email *

Message *

Argon Maltimedia Bangladesh. Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget