হরিদেবপুরের বাইশার দোলায় প্রশাসনের বিপক্ষে ওরা কারা? ওদের খুঁটির জোর কোথায়?

 হরিদেবপুরের বাইশার দোলায় প্রশাসনের বিপক্ষে ওরা কারা? ওদের খুঁটির জোর কোথায়?


♦সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের শেষ মাথায় বাইশার বিল এলাকায় চারটি পয়েন্টে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ভূমি আইন বিরোধী

হওয়ায় জনগণের অভিযোগ পেয়ে প্রায় এক মাস আগে বন্ধ করে দিয়েছিল এ্যাসিল্যান্ড রাসেল মিয়া। ১৪ জনকে আসামী করে মামলাও দেয়া হয়েছিল। দুইদিন

বন্ধ থাকার পর মামলা থেকে জামিন নিয়ে বালু উত্তোলনের নতুন সরঞ্জাম কিনে আবারও দিনে-রাতে ২৪ ঘন্টা এখন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে চিহ্নিত ঐ বাল খেকো মহলটি। 


পাশেই কোতয়ালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়েও তাদের দৌরাত্ন থামাতে পারছে না। তাই স্থানীয়

জনগণের মুখে মুখে প্রশ্ন উঠেছে, বাইশার দোলায় প্রশাসনের বিপক্ষে ওরা কারা? ওদের খুঁটির জোড় কোথায়? প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করে এমন শক্তি

কোথায় পেলো? 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হরিদেবপুর থেকে মমিনপুর যাওয়ার পাকা রাস্তাটি বালুবাহী ট্রাকের চলাচলে ভেঙ্গে ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পুরো রাস্তাটি ধুলোয় ভর্তি। বালুবাহী ট্রাক চলাচল করার কারণে

সরকারী বাইশার বিলের দুই পাশের বাঁধ দেবে গেছে। এবার পানি বেশী হলে সরকারী বাইশার বিলটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমন প্রশ্ন করা হলে এক বালু

ব্যবসায়ী বলেন, তাতে আপনার কি? অনেক সাংবাদিক  এখানে এসেছিল। দুইশ করে টাকা নিয়ে চলে গেছে। আপনি কোন সাংবাদিক ? আমি ছোট সাংবাদিক। ছবি তুলছেন কেন? লাগবে। এরকম অনেক ছোট ছোট বাক যুদ্ধ হওয়ার পর এই প্রতিনিধির মোটরসাইকেল চালকের হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলেন, রাখেন ভাই। আপনার মতো কোন সাংবাদিক এতো প্রশ্ন করে নাই। রিপোর্ট করিয়েন না। এই সাংবাদিক সম্মানের সাথে টাকা ফেরত দিয়ে চলে এসেছেন। বাইশার বিলের চারটি পয়েন্টে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিযোগীতা চলছে। প্রতিদিন শত শত মাহিন্দ্র ট্রাক্টর সরকারী বাইশার বিলের বাঁধ দিয়ে চলাচল করায় বিলটির দুই পাশের বাঁধ দেবে পানির সমান হয়ে গেছে। স্থানীয় জনগণ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এভাবে উপর্যুপরী খনন করা হলে বাইশার দোলাটি দেবে যাবে। আমরা শুনেছি সেখানে সরকারী জমি খনন করা হচ্ছে। হরিদেবপুরের ভুমি কর্মকর্তা ওদের ভয়ে সেখানে যেতে পারেন না। ওদের দমাতে হলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেডের অভিযান লাগবে। আসুন দেখে নেই বালু মহল আইন কি বলে?

সরকারের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর ধারা ৫-এর ১ উপধারা অনুযায়ী, পাম্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪-এর (খ) অনুযায়ী, সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা অথবা

আবাসিক এলাকা থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। আইন অমান্যকারী দুই বছরের কারাদন্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়

দন্ডে দন্ডিত হবেন। বলা বাহুল্য, এসব আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। আর আইন ভঙ্গকারী যদি প্রভাবশালী হন, তাহলে তো আইন প্রয়োগের কোনো প্রশ্নই নেই।

হরিদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বলেন, বাইশার বিলের বালু উত্তোলনের অভিযোগ অনেক আগেই পেয়েছি। কিন্তু আমার কিছুই করার নেই। প্রশাসন করতে পারে। 

রংপুর সদর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বাইশার দোলায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আমার ফোর্স দিনে রাতে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে পাইপ, মেশিন নষ্ট ভেঙ্গে দিয়ে এসেছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা চেষ্ঠা করা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। দ্রুত অভিযান চালানো হবে। এ্যাসিল্যান্ড রাসেল মিয়া এব্যাপারে বলেন, জেলা প্রশাসক স্যারের অনুমতি নিয়ে সেখানে পুনঃরায় কঠোর অভিযান চালানো হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদিয়া সুমী আমাদের এ প্রতিবেদককে বলেন, সেখানে দ্রুত সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।


(খন্দকার মিলন আল মামুন, সাধারন সম্পাদক, সদর উপজেলা প্রেসক্লাব, রংপুরঃ)

Post a Comment

[blogger]

Amader Rangpur news

Contact Form

Name

Email *

Message *

Argon Maltimedia Bangladesh. Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget