রংপুরে শিবির থেকে জাপার কেন্দ্রীয় নেতা: হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন নামঞ্জুর

 রংপুরে শিবির থেকে জাপার কেন্দ্রীয় নেতা: হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন নামঞ্জুর


রংপুর অফিস

রংপুর কারমাইকেল কলেজের সাবেক ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও বর্তমান জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফিউল ইসলাম শাফিকে এক আইনজীবীর দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।


সোমবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আদালত থেকে একটি পিজন-ভ্যানে করে তাকে কারাগারে নেয়া হয়।এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহী নাশকতার দুটি মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন রংপুর সিটি কর্পোরেশন সাবেক ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এই কাউন্সিলর।


আদালত ও আইনজীবী সূত্রে জানা যায়-শাফির বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনার অপরাধে এক আইনজীবীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ভিকটিম হিসাবে ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি নিজেই মামলাটি করেছিলেন এএসএম মাহমুদুল হক সেলিম নামে রংপুর জজকোর্টের  এক আইনজীবী।


রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতা ও সহিংসতার স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের ৬/১৭ এবং ১৭/১৬ নম্বর মামলায় আত্মসমর্পণ করে গত ২৫ অক্টোবর রংপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ জুলফিকার আলীর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে আদালত আবেদন না-মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

 

এই অবস্থায় সাফির আইনজীবী সুবগত গীন রংপুর জজ কোর্টের আইনজীবী এএসএম মাহমুদুল হক সেলিমের দায়ের করা সিআর ৬৭/২০ মামলায় জামিনের আবেদন করলে সোমবার দুপুরে তাকে জেলখানা থেকে মহানগর তাজহাট আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে আনা হয়।



এ সময় আইনজীবীরা সিআর ৬৭/২০ নম্বর মামলায় সাফির জামিনের বিরোধিতা করেন। আদালত জামিন শুনানির পর সাফির পক্ষে করা জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 

ইতিপূর্বে সাফি ইসলামের বিরুদ্ধে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে ছাত্রশিবিরের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা হিটলারকে প্রকাশ্যে ড্রিল-মেশিন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুটো করে হত্যা, ছাত্রলীগের আরেক নেতা সবুরের দুটি হাত কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করাসহ অনেকের হাত ও পায়ের রগ কাটা ও অঙ্গহানির অভিযোগ রয়েছে।

 

এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলেও তৎকালীন সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে মামলাগুলো প্রত্যাহার বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আত্মগোপনে ছিলেন শাফি। পুলিশের খাতায় পলাতক থাকলেও ২০১২ সালে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে কমিশনার পদে নির্বাচিত হন। 

 

২০১৩-১৪ সালে জেলা ব্যাপী সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী ব্যাপক সহিংসতা, জ্বালাও-পোড়াওয়ে নেতৃত্ব দিয়ে বেশকিছু মামলায় আসামী হন। কিন্তু পরবর্তীতে শিবিরের রাজনীতি বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে নতুন করে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। এসময় প্রকাশ্যে জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ডে অংশ নিলেও পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

 

কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় এলাকায় জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অনেক অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে একই ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করে হেরে গেলেও জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়। জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান শাফি।

 

দলীয় চেয়ারম্যান এরশাদের মৃত্যুতে রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে এরশাদপুত্র রাহগীর আল মাহী সাদ এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার বিরোধিতা করে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে সরে যান।

 

অ্যাডভোকেট এএসএম মাহমুদুল হক সেলিম বলেন, এক সময়ের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার পরবর্তীতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জাতীয় পার্টির পদ পদবী ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার করায় তার বিরুদ্ধে এখনও কেউ কথা বলার সাহস পায় না।

Post a Comment

[blogger]

Amader Rangpur news

Contact Form

Name

Email *

Message *

Argon Maltimedia Bangladesh. Powered by Blogger.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget